Wednesday 24 June 2015

পুস্তক পর্যালোচনা~ শেষের কবিতা (বিপ্লব বেসরা)

শেষের কবিতার (বিপ্লব বেসরা) পুস্তক পর্যালোচনা:-


বৃষ্টি বিনিময়
লেখক: হর্ষ দত্ত
প্রকাশক: আনন্দ প্রকাশনী 
দাম: ১০০




আমার পড়া লেখকের প্রথম কোনো লেখা।এক কথায় বলতে গেলে বেশ ভালো লেগেছে। অনেক দিন পরে কোনো গল্পের সাথে একাত্ম মনে হল। গল্পের শুরু দুই জন কিশোরীর স্কুল ম্যাগাজীনে দু জন বিখ্যাত কবির দুটি কবিতা নিজের নামে চালিয়ে দেওয়া থেকে ,যারপর শুরু হয় তাদের শাস্তি নিয়ে তোড়জোড়ের পালা। কিন্তু এর মধ্যেই জানা যায় ম্যাগাজীনের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষিকা একসময় তাদের লেখাকে তাদের নিজের বলে বিশ্বাস করতে না পেরে তাদের ভর্ৎসনা করার ঘটনা,যার থেকে রাগে অভিমানেই তাদের এই কাজ করা। এরপরে চলতে থাকে ন্যায়-অন্যায়ের যুযুধান,কে ঠিক কে বেঠিক,কে বেশি দোষী,কে কম দোষী,কেন তারা ওই কবিতা টুকে দিল বা কেন ওই শিক্ষিকা সেই কবিতা চিনতে পারলেন না,কে আসল কালপ্রিট এই প্রশ্নের চারিপাশেই আবর্তিত হতে থাকে গল্পের ঘটনাপ্রবাহ।
লেখক হর্ষ দত্তের লেখনির মধ্যে একটা সরল ভাব আছে,তাতে খুব ভারীক্কি শব্দের প্রয়োগ করে অকারন দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা যেমন নেই তেমনি সহজ সরল লেখার নাম করে বাজারী সস্তা চটকারী শব্দের(যার প্রয়োগ বেশ কিছু বর্তমান পপুলিস্ট সাহিত্যিকই করে থাকেন) ব্যবহারও কিছু নেই। গল্পের সংলাপ এর প্রকৃতি খুবই বাস্তবিক এবং তাতে কোনো অযাচিত দর্শনের অতিরঞ্জন নেই। গল্পের মূল উপজীব্য আজকের সমাজে ছোটদের প্রতি বড়দের ধ্যানধারণা নিয়ে। এই rat race যুগে অনবরত সন্তানের উপর প্রত্যাশার চাপ,সেটা সবসময় পূরণ না হতে পারার জন্য বাবা মায়েদের আরো হতাশা ও সেখান থেকে আরো চাপ সৃষ্টির প্রবণতা আজকের দিনে নতুন কিছু নয়। গল্পের প্রধান বিষয় রূপে আলোকপাত না করলেও লেখক খুবই নিপুণ ভাবে তা আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। শুধু একটা জিনিসই ভালো লাগল না,গল্পের একজন অন্যতম মূল চরিত্র সেই কিশোরীর একজন যাকে সারাটা গল্প জুড়ে বেশ একজন শক্ত পরিণত চরিত্র হিসেবে গড়ে তোলা হল তাকে গল্পের শেষে ওই ভাবে দূর্বল না করে দিলেও চলত হয়ত। গল্পের শেষের এই নাটকীয়তা বাদ দিলে গোটা গল্পটাই বেশ যত্নসহকারে লিখিত ও পরিবেশিত হয়েছে। এই উপন্যাসের জন্য আমি লেখককে দিলাম ১০ এর মধ্যে ৭.৫..



পুনশ্চ: নামকরণের সার্থকতা টি অবশ্য আমি বুঝে উঠতে পারিনি। কেউ বুঝে থাকলে সাহায্য করবেন।

No comments:

Post a Comment